শীতে ত্বকের জন্য বিশেষ পরিচর্যা

এই শীতে শুষ্ক ত্বক থেকে মুক্তি পেতে চাইলে আপনাকে সঠিকভাবে এর যত্ন নেওয়া উচিত। কারণ, শীতে ত্বকের যত্ন ঠিকভাবে না নিলে চোখের নিচে কালো দাগ পড়তে পারে এবং এতে করে আপনার শরীরের চামড়া শুষ্ক হয়ে যায়। এখন বাজারে শীতে ত্বকের রক্ষা করার জন্য বিভিন্ন ক্রিম পাওয়া যায়। কিন্তু আপনাকে যাচাইবাছাই করে ভালো মানের ক্রিম ব্যবহার করা উচিত। কারণ, প্রসাধনী ভালো মানের না হলে আপনার ত্বকের ক্ষতি হতে পারে।

শীতে ত্বকের বিশেষ পরিচর্যা

১) ত্বকের যত্নেঃ সাধারণত অন্য সময়ের থেকে শীতের ফেস প্যাক হবে একটু আলাদা। কেননা এসময়ে দরকার ত্বকের বাড়তি যত্ন। আপনি চাইলে অতি দ্রুত ত্বকের গোলাপি আভা ফিরিয়ে আনতে অলিভ, কোকোনাট এবং বেশি করে জুজুবা তেল কয়েক ফোঁটা আপনার গালে এবং ভ্রু এর হাড়ে ধীরে ধীরে প্রয়োগ করতে থাকেন। এছাড়াও, আপনি চাইলে ত্বককে মসৃণ ও কোমল রাখতে সামুদ্রিক কড মাছের যকৃত দ্বারা তৈরি তেল সম্পূরক উপাদান হিসেবে ব্যবহার করুন। এক্ষেত্রে আপনি লেবুর রস এবং কড লিভার তেল এর মিশ্রণ তৈরি করে নিয়ে আপনার ত্বকে প্রয়োগ করতে পারেন।

২) মুখের ত্বকের জন্য তেলঃ ত্বকের নমনীয়তা ধরে রাখতে আপনি এই মৌসুমে বিভিন্ন নামিদামি ব্র্যান্ডের ময়েশ্চারাইজার বাদ দিয়ে আপনি বেছে নিতে পারেন তেল। শুনতে অদ্ভূত শোনালেও একথা সত্যি যে, তেল সব ধরনের ত্বকের জন্য দারুণ উপকারী। এই তেলে রয়েছে অ্যন্টিএইজিং উপাদান যা আপনার ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখার পাশাপাশি আপনার ত্বক টানটান করতেও অনেক সাহায্য করে। অলিভ অয়েল, আমন্ড অয়েল ইত্যাদি সব ধরনের ত্বকের জন্য উপকারী। আপনি ব্যবহার করতে পারেন।

৩) চুলের যত্নে ‘হট অয়েল’ মালিশঃ  এতে করে আপনার চুল হারানো আর্দ্রতা ফিরে পায় এবং চুল নরম ও মসৃণ হয়ে ওঠে। ভালো ফলাফলের জন্য আপনি দুই থেকে তিনটি তেল ব্যবহার করতে পারেন  যেমন- ক্যাস্টর অয়েল, আমন্ড অয়েল, অলিভ অয়েল এবং নারিকেল তেল নিয়ে পরিমাণ মতো মিশিয়ে হালকা গরম করে ভালভাবে চুলের গোড়ায় মালিশ করতে হবে হালকা হাতে। আপনি প্রতিবার শ্যাম্পু করার আগে চুলে তেল দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। এতে করে আপনার চুল ভাল থাকবে।

৪) হাত মোজা পরা উচিতঃ এই শীতে অতিরিক্ত ঠাণ্ডায় হাতের ত্বকের ক্ষতি হয়। তাই শীত বেড়ে গেলে আপনি চাইলে হাত মোজা পড়তে পারেন। বিশেষ করে রাতে বা মোটরবাইকে ভ্রমনের সময় বা ঘরের বাইরে থাকা অবস্থায় থাকে মোজা পরে থাকা উচিত। এতে করে আপনার শীত কম লাগবে। তবে একটা কথা মোজা পরার আগে হাতে লোশন লাগানো উচিত হবে না। মোজা খুলে ফেলে তারপর আপনি হাতে ক্রিম বা লোশন লাগালে উপকার পাওয়া যাবে।

৫) শরীর স্কাব করতে বাথ সল্টঃ সারা বছর আপনি যে বডি স্ক্রাবগুলো ব্যবহার করে থাকেন এই মৌসুমে সেগুলো সরিয়ে রেখে বেছে নিন বডি সল্ট। কেননা বাথ সল্ট, ত্বকে জমে থাকা মৃত কোষ দূর করতে সাহায্য করে এবং আপনার ত্বক শীতে নিস্তেজ হয়ে পড়া ত্বকে জেল্লা ফিরিয়ে আনে। তাছাড়া একটা কাজ করতে পারেন, কুসুম গরম পানিতে বাথ সল্ট ছড়িয়ে কিছু সময় আপনার শরীর এলিয়ে থাকা যায়। এতে করে পায়ের ফোলাভাব কমবে, ক্লান্তি দূর হবে এবং আপনার পিঠে ব্যথাও উপশম হবে। তাছাড়া এতে আরও রয়েছে তৈলাক্ত উপাদান যা ত্বক শুষ্ক করবে না বরং আপনার শরীরের নমনীয় রাখতে সাহায্য করবে।

৬) ঠোঁটের জন্য বাড়তি যত্নঃ আমাদের শরীরের ত্বকের অন্যান্য অংশের তুলনায় ঠোঁটের চামড়া অনেকটাই পাতলা হয়ে থাকে। তাই শুষ্ক মৌসুমে বা শীতকালে ঠোঁট খুব দ্রুত আর্দ্রতা হারায়। তাই প্রয়োজন পরে এর বিশেষ যত্ন। আপনি চাইলে প্রতি ঘন্টায় একবার করে লিপ বাম লাগিয়ে নিতে হবে। তাছাড়া আপনি চাইলে লেবু ও চিনি আর সামান্য মধু মিশিয়ে ঠোঁট স্ক্রাব করে নিতে হবে সময় করে। তাহলে আপনার ঠোঁট শীতে ভাল থাকবে।

৭) হাতের যত্নে ব্যবহার হ্যান্ড ক্রিমঃ হোক শীতের দিন বা গরমের দিন আমাদেরকে বেশ কয়েকবার হাত ধোয়ার প্রয়োজন পড়ে থাকে। আর শিতকালে একবার হাত ধোয়ার পরই হাত শুষ্ক হয়ে পড়ে। তাই আপনি চাইলে হাতের যত্নে সব সময় সঙ্গে হ্যান্ড ক্রিম রাখা উচিত। দুধ বা দুধজাতীয় উপাদান আছে এমন সব হ্যান্ড ক্রিম সবচাইতে বেশি উপকারী। আর আপনি চাইলে এই মৌসুমে হালকা হ্যান্ড ওয়াশ ব্যবহার করতে হবে।